বৃহস্পতিবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০১২

"ছেঁড়া গল্প" part 2


part2

তার চোখের পানি।
জাহেদের অস্থিরতা বেড়েই চলেছে, সে চেয়েছিল মুমুকে চমকে দিতে, সেজন্যই না বলেই এবার রাজশাহী যাওয়া। বেলা বারোটা, কিন্তু এখনও মুমুর ফোন বন্ধ, একবার মনে হলো কোনোভাবে কি টের পেয়েছে ও জাহেদের আসাটা? হয়তো উলটো তাকে
 ভয় দেখনোর জন্য এটা করছে, এটা মুমুর জন্য নতুন কিছু না। এর আগেওজাহেদকে এভাবে ভয় দেখিয়েছে সে। কিন্তু এত বেলা করে কোনও দিন তার ফোন বন্ধ থাকে না। আবার কল দিলো সে, অপর পাশ থেকে অপারেটর এর সেই চেনা পরিচিত যান্ত্রিক স্বর ভেসেআসে।

--------------- --------------
পাঠকরা হয়তো মনে মনে ভাবছেন এর পরে কি হলো? মুমু কেন ফোন ধরলো না?কি হলো ওদের শেষ পর্যন্ত? মুমু কিদেখা করেছে জাহেদের সাথে?? অসম্পূর্ণ একটি কাহিনী, তাই না? আমিতো আগেই বলেছি যে গল্পের নাম “ছেঁড়া গল্প”, তাছাড়া জীবনের সব গল্পই কি ছেঁড়া নয়? আমাদের গল্পগুলো কি কখনও শেষ হয়? জাহেদের ছেঁড়া জীবনের গল্পও শেষ হয়না, শুধু কিছু ঘটনা যা পাঠকদের জানাচ্ছি, পরিশিষ্ট হিসেবে নয়, গল্পের একটি অংশ হিসেবে।

--------------- ---------------
মুমু চার বছর আগেই মারা গিয়েছে। যে গভীর মমতায় সে জাহেদের জীবনকে ঘিরে রেখেছিল, জাহেদ সেই মায়া থেকে বের হতে পারেনি, হয়তো কোনদিনপারবেও না। তার জীবন আজও চার বছর আগে স্থির হয়ে আছে, যার কাছে মুমু স্মৃতি না, বাস্তব হয়ে বেঁচে আছে।যে এখনও প্রতি মাসে রাজশাহী যায় মুমুর সাথে পদ্মা পাড়ে একটি গোধূলি পার করতে, আজও ছবি তোলে শুধু মুমুকে একবার বিস্মিত করার জন্য,মুমুর বন্ধ মোবাইল ফোনে কল করে যায় মনে আশা নিয়ে হয়তো কোনোদিন খোলা পাবে। টি বাঁধের সেই বেঞ্চে দুই প্লেট ফুচকা নিয়ে জাহেদকে এখনও বসে থাকতে দেখা যায় মুমুর পোষা কাকগুলোর সাথে সূর্যাস্ত দেখতে। কখনও যদি আপনি যান সেখানে, দেখবেন সূর্যাস্তের ঠিক আগে এলোমেলো কাকের দল বেঞ্চটিকে ঘিরে বসে আছে। তাদের মধ্যে রহস্যময় নীরবতা, যেন তারা অপেক্ষা করছে কারও জন্য।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন