বৃহস্পতিবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০১২

সার্চ ইন্জিন অপটিমাইজেশন (SEO)-1


কিভাবে ব্যবহার করবেন কী-ওয়ার্ড

কী-ওয়ার্ড সম্পর্কে আমরা মোটামুটি একটা ধারণা পেয়েছি।এখন দেখা যাক কিভাবে এই কী-ওয়ার্ড ব্যবহার করবেন।কী-ওয়ার্ড আপনি ২ ভাবে ব্যবহার করতে পারেন।যেমন
  • ১।মেটা ট্যাগের মাধ্যমে
  • ২।সাইটের কনটেন্ট বা আর্টিকেল এর মাধ্যমে।
  • আসুন নিচে থেকে আরো বিস্তারিত জেনে নেয়া যাক।

    ১।মেটা ট্যাগের মাধ্যমে

    ওয়েব সাইট ডিজাইনের সময় আমরা অনেক ধরনের মেটা ট্যাগ নিয়ে কাজ করি।এর মধ্যে
    < meta name=”keywords” content=”some keyword,another keyword” />
    এই ট্যাগটি “মেটা কী-ওয়ার্ড ট্যাগ” নামে পরিচিত।এই মেটা কী-ওয়ার্ড ট্যাগ দ্বারা আপনি আপনার সাইটের কী-ওয়ার্ড ব্যবহারের কাজ করতে পারবেন।এ জন্য আপনি আপনার সাইটের HTML এডিটর পেজে গিয়ে <head> ও </head> ট্যাগ এর মধ্যে আপনার বাছাই করা কী-ওয়ার্ডটি বসিয়ে দিন।

    ব্যাস হয়ে গেল আপনার সাইটে মেটা ট্যাগ ব্যবহার করা।আরো অনেক মেটা ট্যাগ আমরা সাইটে ব্যবহার করে থাকি ।তবে মেটা ট্যাগ ও কী-ওয়ার্ড এর ব্যবহারের বেশ কিছু নিয়ম বা টিপস মেনে চলা উচিত।ড়তে করে আপনি আরো ভালো ফলাফল পেতে পারেন।যেমন:
  • ১।আপনর সাইটের যে কী-ওয়ার্ডটির উপর ভিত্তি করে বানাবেন সেই কী-ওয়ার্ডটি যেন আপনার মেটা কী-ওয়ার্ড ট্যাগে ৩ বারের বেশি না থাকে।
  • ২।আপনার সাইটে মেটা কী-ওয়ার্ড ট্যাগ ব্যবহার করুন সর্বোচ্চ ১ বার।
  • ৩।মেটা কী-ওয়ার্ড ট্যাগে একটি কী-ওয়ার্ড বার বার না লিখে অন্য ভাবে তা লেখার চেষ্টা করুন,যেমন প্রথমে যদি লেখেন Download hindi movie hindi movie তা হলে সেটাকে একটু ঘুরিয়ে নিয়ে download hindi movie বা আরএকটু পরিবর্তন করে download hindi movie online করে নিতে পারেন।
  • ৪।কী-ওয়ার্ড এর বানান যেন কোনমতেই ভুল না যায় সেদিকে কড়া নজরদারি রাখতে হবে।যেমন বুশ লাদেন কে নজরদাড়িতে রেখেছিল :)
  • ৫।প্রতিটি কী-ওয়ার্ডের পর একটি করে কমা(,) ব্যবহার করুন.
  • তারপর আপনি আপনার বাছাই করা কী-ওয়ার্ড গুলো অন্যান ট্যাগে ব্যবহার করুন।যেসকল ট্যাগে আপনি আপনার কী-ওয়ার্ড ব্যবহার করতে পারেন সেগুলো হলো:
  • ১।description- Meta Tag
  • ২।Titel – Meta Tag
  • ৩।author- Meta Tag
  • ২।সাইটের কনটেন্ট বা আর্টিকেলের মাধ্যমে

    আমরা অনেক মনে করি যে সার্চ ইন্জিন গুলো কেবল মেটা ট্যাগ নিয়ে সাইট ইনডেক্স করে।অনেক আবার এ ও মনে করেন যে মেটা কী-ওয়ার্ড ট্যাগ ব্যবহার না করলে হয়তো সাইট ইনডেক্স হবে না,ভালো ফল পাবে না ইত্যাদি ইত্যাদি।তাই তাদের জন্য বলছি মেটা কী-ওয়ার্ড ট্যাগটি সার্চ ইন্জিনের জন্য অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ।কিন্তু তা মানে এই নয় যে সাইট ইনডেক্স হবে না কিংবা সাইট ইনডেক্স হলেও ভালো ফল পাওয়া যাবে না।মেটা কী-ওয়ার্ড ট্যাগটি সার্চ ইন্জিনের ক্রাউলিং করার কাজকে অনেক সহজ করে দেয়।যেমন আপনি যদি একটি বই পড়ার সময় বইয়ের সূচিপত্র দেখে কোন তথ্য খোজ করেন তা সহজেই আপনি খুজে পাবেন।আর মেটা কী-ওয়ার্ডটি আপনার সাইটের সূচিপত্রের মত কাজ করে।যেটা থাকলে সার্চ ইন্জিন গুলোর কাজ করতে সুবিধা হয়।তো আসল কথায় আসি,
    আপনি যখন আপনার সাইটের কোন কনটেন্ট বা আর্টিকেল লিখবেন তখন আপনি যে সকল শব্দ ব্যবহার করবেন তাই হল কী-ওয়ার্ড।তাই আপনার বাছাই করা কী-ওয়ার্ড এর উপর ভিত্তি করে আপনার কনটেন্ট বা আর্টিকেল লিখুন।এটাই আপনার প্রথম কাজ।তাছাড়া অন্যান টিপস গুলো হলো….
  • ১।প্রথমে আপনি আপানর বাছাই করা কী-ওয়ার্ড গুলোর একটা খসড়া তালিকা তৈরী করুন।এই খসড়া তালিকায় কী-ওয়ার্ড গুলো আপনার পছন্দ আনুসারে সাজান।
  • ২।আপনার বিষয় বস্তুর সাথে কোন কী-ওয়ার্ডটি বেশি মানায় সেটা নির্বাচন করুন।
  • ৩।আপনি আপনার কনটেন্ট বা আর্টিকেল লেখার সময় কী-ওয়ার্ড ব্যবহারের উপর জোর দিন।
  • ৪।আপনি আপনার বাছাই করা কী-ওয়ার্ডটি আপনার লেখা কনটেন্ট বা আর্টিকেলের প্রথম ২০০টি শব্দের মধ্যে রাখুন।এটা কিন্তু খুবই গুরুত্বপূর্ণ।এতে করে সার্চ ইন্জিন অপটিমাইজেশনে অনেক ভালো ফল পাওয়া সম্ভব।
  • ৫।শুধু মাত্র ১ টি কী-ওয়ার্ড নিয়ে পড়ে থাকবেন না।একই ধরণের কী-ওয়ার্ড গুলো ঘুরিয়ে ফিরিয়ে ব্যবহার করার চেষ্টা করুন।
  • ৬।গুগল সহ অন্যান সার্চ ইন্জিন কিন্তু কনটেন্ট বা আর্টিকেলে দেয়া কী-ওয়ার্ড গুলোর দিকে বেশি নজর দেয়,যা মেটা ট্যাগের চেয়ে অনেক গুন বেশি।কিভাবে? আসুন দেখে নিই
    মনে করুন আপনি গুগল সার্চ ইন্জিনে গিয়ে সার্চ করলেন “download indian movie” লিখে।এর পর যে সাইট গুলো আসবে তার পাশে লেখা “Cached” এ ক্লিক করুন।

    তারপর গুগলের Cached করা সাইটের পাতাটি আপনার সামনে হাজির হবে।


    সেখানে তারা মার্কিং করে দেখাবে যে সাইটে আপনার দেয়া কী-ওয়ার্ড গুলো কেমন ভাবে তারা ব্যবহার করেছে।
    তো বুঝলেন সাইটের কনটেন্ট বা আর্টিকেলে আপনি যদি আপনার সার্চ কী-ওয়ার্ড ব্যবহার না করেন তাহলে কেমন ফল আপনি পেতে পারেন।
    আজ এই পর্যন্তই।আশা করি আপনারা কী-ওয়ার্ড সম্পর্কে এই দুই পোস্টে অনেক কিছু জানতে পেরেছেন।আপনাদের কাজে আসলেই আমার চেষ্টা সার্থক হবে।আর যদি আরো কিছু জানার থাকে তাহলে আমাকে মোবাইল বা মেইল করতে পারেন।আমি চেষ্টা করবো সে সকল সমস্যার সমাধান করে দিতে।তো সবাই ভালো থাকবেন ।ধন্যবাদ।

    আগামী পর্বে যা থাকছে

    আমার সার্চ ইন্জিন অপটিমাইজেশন (SEO) নিয়ে ধারাবাহিক পোস্ট “SEO টিউটোরিয়াল” এর ৩য় পর্বটি সাজানো হবে অন-পেজ অপটিমাইজেশন (On-page Optimaizetion) নিয়ে।যেটা সার্চ ইন্জিন অপটিমাইজেশন (SEO) জন্য খুব খুব খুবই গুরুত্বপূর্ণ।তো আশা করি মিস করবেন না।



    বুধবার, ২৬ ডিসেম্বর, ২০১২

    ডোমেইন পার্ক


    আজকাল অনেককেই শুনি এডসেন্স এপ্রুভ হচ্ছে না, সাইটে ভিজিটর থাকলেও ক্লিক নেই কিংবা ব্লগিংয়ে সময় দিতে পারছেন না তাই আয় কম। তাই ডোমেইন পার্ক করে সাইটের আয় একেবারে বন্ধ হবার চিন্তা থেকে সহজেই মুক্ত হতে পারেন যেমনি ঠিক তেমনি ডোমেইনটি ভাল হলে তা বিক্রীর মাধ্যমে আপনার আয় হতে পারে কল্পনাতীত।

    ডোমেইন পার্ক কি?

    Domain Park সম্বন্ধে আগেও বিভিন্ন সময় বলেছি তবে আজ আরেকটু খোলাসা করে বলি। আপনি ডোমেইন পার্ক করা যায় এমন কোন সাইটে আপনার ডোমেইনটি লিস্টেড করলে সেই সাইটের দেয়া ডিএনএস রেকর্ড আপনার ডোমেইন এর সি প্যানেলে বসালে বা তাদের দেয়া লিংকে ফরোয়ার্ড করলেই আপনার ডোমেইনটি পার্ক হয়ে যাবে। এরপর সেখানে তাদের কিছু স্পন্সর এড শো করবে। যেমন এই ডোমেইনটি দেখুন www.worldcup-t20.com ।

    যদি বিক্রী করতে না চান

    যদি বিক্রী করতে না চান বা বিক্রী করবেন কিন্তু পার্ক করবেন না বা দুটোই করতে চান আপনার ইচ্ছা মত যে কোন অপশনই আপনি বেছে নিতে পারেন। যদি শুধু পার্ক করতে চান তাহলে লিস্টেড করার Not For Sale অপশনটি বেছে নিলেই হবে আর আপনার সাইট চালাবেন তাই পার্ক করবেন না শুধু বিক্রীর জন্য লিস্টেড করতে চান তাহলে তাও পারবেন। তবে পার্ক করলে বিক্রীর চিন্তায়ই করা উচিত।

    কোথায় করবেন পার্ক?

    আমি আগেও বলেছি ডোমেইন পার্ক করার জন্য সবচেয়ে ভাল হল Sedo.com এবং এখানে বিক্রীর সুযোগও সর্বাপেক্ষা বেশী। তাই আমার মতে ডোমেইন পার্ক করতে চাইলে প্রথম পছন্দ হওয়া উচিত অবশ্যই সেডো। অবশ্য গুগল এডসেন্সও ডোমেইন পার্ক করতে পারেন।

    কিভাবে করবেন পার্ক

    সেডোতে পার্ক করার জন্য প্রথমেই রেজিষ্ট্রশন করুন। এরপর পার্ক ডোমেইন ট্যাব থেকে ডোমেইন লিস্টেড করলেই হবে। তবে এখানে একটু জটিলতা আছে তা হল তাদের এগ্রিমেন্ট ডাউনলোড করে তাতে আপনার স্বাক্ষর দিয়ে তা আবার তাদের মেইল করতে হবে তারপরই আপনার একাউন্ট থেকে পার্ক করা যাবে।

    কিভাবে হবে আয়?

    আপনারা যদি পার্ক করা ডোমেইন www.worldcup-t20.com টি দেখে থাকেন তবে অবশ্যই খেয়াল করবেন ওখানে কোন কনটেন্ট নেই আছে বিভিন্ন স্পন্সর লিংক যেহেতু মূল জায়গা গুলোতেই স্পন্সর লিংক তাই স্বাভাবিকভাবেই ক্লিকের পরিমান বেশী হবে। আর আমার ব্যাক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে দেখেছি এখানে ক্লিত প্রতি আয়ও খারাপ না। আর আপনার ডোমেইনটি পার্ক করার সাথেসাথে যদি বিক্রীর জন্যও রেখে থাকেন তবে তা যেমন মার্কেটপ্লেসে দেখাবে তেমনি তা আপনার সাইটের পেজেও দেখাবে যে এটি বিক্রীর জন্য আছে অবশ্য সেডোর মার্কেট প্লেস থেকেই বিক্রী হয় বেশী। তবে সমস্যা যেটি তা হল আপনার আয় ২৫০ ইউরো না হলে আপনি তুলতে পারবেন না যা ডোমেইন বিক্রী না হলে হতে একটু সময়ই লাগে যদি আপনার ডোমেইনটি জনপ্রিয় না হয়। অবশ্য বিক্রী হলে কিন্তু এক তুড়িতেই এই অংক ছাড়িয়ে যাবার ঢের সম্ভাবনা রয়েছে। তাই পার্ক করলে বিক্রীর চিন্তায়ই করা উচিত।

    কোথা হতে আসে এই অর্থ?

    ডোমেইন অনেকেই পার্ক করে তার মধ্য কেউ কেউ তাদের ডোমেইনকে দ্রুত বিক্রীর জন্য পার্ক করা অন্য ডোমেইন গুলোর পেজে এড দেয়ার জন্য অর্থ প্রদান করে কতৃপক্ষকে। যেই স্পন্সর লিংকগুলোই শো করে পার্ক করা ডোমেইন এর পেজে।

    কিভাবে হাতে পাবেন টাকা?

    অনেকেই বলবেন যে আয় তো হলো কিন্তু টাকা পাবেন কিভাবে? এটাও খুব ইজি কারন সেডো থেকে টাকা পেপাল ছাড়া ব্যাংক একাউন্টে সরাসরি ট্রান্সফার করা যায়। তাই কোন ঝামেলা ছাড়াই দ্রুত টাকা হাতে পেয়ে যাবেন যদি আয় করতে পারেন।

    ফ্রি ডোমেইনকে পার্ক

    আর ইচ্ছে করলে যে ফ্রি ডোমেইন দিয়েও ট্রায়াল দিতে পারেন তাতো আগেই বলেছি তবে তা বিক্রী হয় না বললেই চলে। তারপরও পার্ক থেকে কিন্তু আয়ের সম্ভাবনা কিন্তু রয়েই যায় তা হোক না ফ্রি ডোমেইন।

    সত্যিই কি ভাল আয় করা যায়?

    অনেকেই বলে থাকেন ডোমেইন পার্ক থেকে আয় সহজে হয় না অথবা অনেক ডোমেইন পার্ক করে রেখেছেন কিন্তু কোন আয় নেই। আপনার ডোমেইনটি যদি সার্চ মার্কেটিংয়ের জন্য অপটিমাইজ করে থাকেন এবং আগের কিছু ব্যাকলিংক থেকে থাকে তবে আয় করাটা যে খুব কঠিন কিছু নয় সেটা বোধ করি আর বলার প্রয়োজন নেই কারন ভিজিটর আসলে এখানে ক্লিক পাবার সম্ভাবনা ২০% এর উপরে যা এডসেন্সে ৫% এর নিচে। আর ভিজিটর বেশী হলে বিক্রীর সম্ভাবনাও অনেকখানি বেড়ে যায়।তবে ভিজিটর আনার জন্য যেটা করা উচিত পার্ক করার আগে কিছুদিন ব্লগ বানিয়ে তার অনপেইজ অপটিমাইজ করা এবং পার্ক করার অফপেইজ অপটিমাইজ অব্যাহত রাখা। আর চেষ্টা করবেন অবশ্যই আন্তর্জাতিক গুরুত্বপূর্ন এবং ভালো নামের ডোমেইন নিতে।

    এডসেন্স ফর ডোমেইন সম্বন্ধে- (1)



    আমরা যারা এডসেন্স পাবলিশার তাদের কাছে উপরের দৃশ্যটি খুবই পরিচিত। কিন্তু আমরা অনেকেই চিহ্নিত অংশের এডসেন্স ফর ডোমেইন অপশনটি ব্যাবহার করি না। কিন্তু এই অপশনটি এডসেন্স এর অন্যতম গুরুত্বপূর্ন। আজ এর বিস্তারিত নিয়েই আমার এই পোষ্টটি করা।


    এডসেন্স ফর ডোমেইন কি?
    এডসেন্স ফর ডোমেইন হল এডসেন্স এ কোন ডোমেইন কে পার্ক করে রাখা।
    ডোমেইন পার্ক কি?
    ডোমেইন পার্ক (Domain Park) হলো ধরুন আপনি খুব ভালো নামের একটি ডোমেইন কিনে রেখেছেন যার চাহিদা হয়তো ভবিষ্যৎ এ খুব বাড়তে পারে সেটাকে বিক্রীর জন্য কোন সাইটে রাখা তাই হচ্ছে ডোমেইন পার্কিং। যেমন ধরুন ওয়াল্ডর্কাপ ২০১১ বা আইপিএল ২০১২ এরকম বিভিন্ন ইভেন্টের ডেমোইন আগেই কিনে রাখলেন পরে তারা যখন ওই ডোমেইন খুজবে না পেয়ে আপনার ডোমেইনটি কিনতে চাইলেই আপনার পোয়াবারো বিশাল দামে বিক্রী করতে পারবেন অনয়াসেই।


    শুধু কি বড় দামের আশায়ই পার্ক করবেন?


    না কারন বড় লাভের আশায় থাকলে কতদিনে আপনার প্রত্যাশিত দাম পাবেন তা বলা দুরূহ। কিন্তু আপনি যদি একটু ভাল ডোমেইন নিয়ে কয়েকশ ডলারে বিক্রীর জন্য চেষ্টা চালান তাহলে বলা যায় আপনি ঘন ঘন এরকম ডোমেইন বিক্রী করতে পারবেন। আর কয়েকশ ডলারে বিক্রীও কিন্তু অনেক লাভজনক কারন ডোমেইনটি মাত্র ১০ডলারে কেনা।

    ক্ষতির সম্ভাবনা আছে কি?

    যদি বিক্রী না হয় তাতেও কোন ক্ষতি নাই কারন যেখানে পার্ক করবেন সেখান থেকে অন্তত বছর শেষে ডোমেইন রিনিউ করার খরচ উঠবে তা নিশ্চিত ভাবেই বলা যায়। তাই এটি সম্পূর্ণ ঝুকিমুক্ত এবং এতে ক্ষতি হবার কোন সম্ভাবনই নাই। আর যদি ডোমেইন কিনতে না চান বা প্রথমে ব্যাপারটা যাচাই করতে চান তাহলে Co.cc এর ফ্রি ডোমেইন দিয়েও যাচাই করতে পারেন কারন এই ডোমেইনও পার্ক করা যায়।

    এডসেন্স ছাড়া আর কোথায় করা যায় ডোমেইন পার্কিং?

    এডসেন্স ছাড়াও আরো অনেক জায়গায় ডোমেইন পার্ক করা যায়। তন্মধ্যে সবচেয়ে ভাল হলোSedo.com। সত্যি বলতে কি Sedo.com ই ডোমেইন পার্কিং এর সবচাইতে ভাল জায়গা।

    কিভাবে করবেন ডোমেইন পার্কিং?

    নিম্নের চিত্র গুলোর মত করে ধাপে ধাপে খুব সহজেই ডোমেইন পার্কিং করতে পারবেন এডসেন্সে।











    একটি দূর্ঘটনা ও ভালোবাসা"

    শায়লার পাশে চুপচাপ বসে আছে শান্ত। শান্ত মোটেও কোন শান্ত মানুষ নয়! তবে মাঝে মাঝে যখন শান্ত থাকে তখন তার দিকে শুধু তাকিয়েই থাকতে ইচ্ছে করে শায়লার! তবে এই সুযোগ সে খুবই কম পায়। কেননা, এই শান্ত যতক্ষণ না বাসায় থাকে ততক্ষণ খুবই অশান্ত থাকে! শান্ত ও শায়লা দুজনই এখন গাড়ীতে, গন্তব্য হাসপাতাল!

    প্রায় দেড় বছর আগের এক কুয়াশা ঢাকা সন্ধ্যায় শান্ত ও শায়লার বিয়ে হয়! এটা কোন লাভ ম্যারেজ ছিল না, উভয় পক্ষের মুরুব্বীদের ইচ্ছায় ঘটে যাওয়া অ্যারেন্জ ম্যারেজ। বিয়ের আগে তারা দুজন দুজনকে চিনতও না! বিয়ের পরই শায়লা ও শান্ত একে অন্যের পাশে আসল! শায়লা সবসময়ই ভাবত, সে যেন এক স্বপ্নের মাঝে আছে! দেড়টা বছরে সেশান্ত কে অনেক অনেক ভালোবেসেছে, কাছে এসেছে, সুখ-দুঃখ ভাগাভাগি করেছে! আর এখন শায়লা তার শরীরে অনুভব করছে নতুন প্রাণের অস্তিত্ব, দেহে বয়ে বেড়াচ্ছে তার নিজের ও শান্তর মিলিত সত্ত্বাকে!

    হাসপাতাল থেকে ফিরছে দুজন, ডাক্তার জানিয়েছে তাদের মেয়ে হবে! খুশীতে আত্মহারা শায়লা বুঝতে পারছে না সে যে কী করবে! শুধু শক্ত করে শান্তর হাতটা চেপে ধরে রাখছে! প্রাণ ভরে দেখছে শান্তর দুষ্টামী মাখা হাসিটা! আহ্, কী সুখ!

    হাসপাতালে শুয়ে আছে শায়লা! এই মাত্র সে তার কন্যাটির জন্ম দিল! মেয়েটি কী ফুটফুটে! কিন্তু এ কী! মেয়ের মুখ দেখে সবাই হাসছে না কেন ?শান্তরও দেখি মুখ কালো! কী হল?

    কিছুক্ষনের মাঝেই সবকিছু পরিষ্কার হল শায়লার কাছে। তার কলিজার টুকরা, চোখের মণি, তার মেয়েটি তার কথা বলার শক্তিটা কোথায় যেন হারিয়ে রেখে এসেছে! তাতে কী হয়েছে? শায়লা ভাবে, সবারই কথা বলতে হবে এমন কী কোন কথা আছে !?শায়লা এভাবেই হিসাব মিলতে থাকে, কিন্তু হিসাব মিলাতে ব্যর্থ হয় শান্ত।

    শায়লার মেয়ে স্মরণের আজ তৃতীয় জন্মদিন! স্মরণ কথা বলতে না পারলেও সবই বুঝতে পারে। সে বুঝতে পারে, সে আলাদা। সবাই কত কথা বলে, কিন্তু সে পারেনা! সবাই তাদের বাবা মায়ের সাথে কত্তো আদরে ভালোবাসায় থাকে। কিন্তু স্মরণ জানে, তার মা ছাড়া আর কেউ তাকে ভালোবাসেনা। ছোট্ট স্মরণ এটাউ বুঝতে পারে যে, সে অন্যরকম বলেই তার বাবা তাকে নিয়ে তার মার সাথে থাকেনা। স্মরণ অনেক বার তার বাবার ছবি দেখেছে। ছবিটা দেখলেই তার মনে হয় ঝাঁপ দিয়ে সে তার বাবার বুকের ওপর পড়ে! কিন্তু সামনা সামনি কখনো দেখলে সে আর এমন চিন্তা করতে পারে না!বরং ভয় পেতে থাকে!

    শান্তর হঠাৎ ঐ পরিবর্তন শায়লার আজও অবাক লাগে! এই মানুষটাকে সে এত্তো ভালোবেসেছিল! এই মানুষটা তাকে এত্তো ভালোবেসেছি! যে কি না নিজের সন্তানের জন্মের এক বছর পর শায়লাকে উপহার দেয় একটি ডিভোর্স লেটার! স্মরণের জন্মের পর এটিই ছিল শয়লার জন্য তার প্রথম উপহার! মাথার উপর ভাঙা আকাশ, চোখের উপর ভাঙা স্বপ্ন আর বুকের মাঝে স্মরণকে জড়িয়ে রেখেই সে সাইন করে দিয়েছিল।

    স্মরণের জন্মের পর শান্ত আবার বিয়ে করে মুক্তিকে। সে আজ প্রায় সাত বছরের ঘটনা। বিয়ের দুই বছর পর মুক্তি জানল সে কখনো মা হতে পারবে না। শান্তও জানল, তার দ্বিতীয় স্ত্রীও তাকে `বাবা' ডাকটি শুনাতে পারব না। ঐদিনই শান্তর আকাশ ভাঙতে থকে।তার নে পরতে থাকে স্মরণর কথা। কিন্তু সে ফিরে যেতে পারে না।এইবার তাকে বাধা দেয় তার বিবেক।

    কাফনে মোড়ানো মুক্তির দেহটির পাশে বসে আছে শান্ত। মুক্তি বুঝতো, শান্ত তার সাথে যে ব্যবহারটা করে তা তো তার নিজেরই দোষে। সেই তো ব্যর্থ হল শান্তকে `বাবা' ডাক শুনাতে। দীর্ঘ সাতটি বছর পর তাই আজ মুক্তি চিরতরে মুক্তি দিল শান্তকে, মুক্তি পেল স নিজেও।

    মুক্তির মৃত্যুর ১৪ দিন পরঃ স্কুল থেকে ফেরার পথে এক্সিডেন্ট করেছে স্মরণ। সে হাসপাতালে। ডাক্তার বলেছে, ভয় নেই, ভালো আছে স্মরণ। তবু শয়লার চিন্তা কমে না।৭টি বছর সে একলাটি পার করেছে স্মরণের সাথে।অতীত মনে করে শায়লা-স্মরণের জন্ম, শান্তর চলে যাওয়া, হঠাৎই তার মন হয়, আজ যদি শান্ত থাকত!দুহাত মাথা চপে ধরে সে । এমন সময় তার পিঠ স্পর্শ করেকটি হাত- শান্ত।শান্ত ক্ষমাপ্রার্থী, তার মেয়ের কাছে, স্ত্রীর কাছে।

    স্মরণ সুস্থ হয়ে ফিরল বাসায়! জীবনে প্রথমবারের মত সে দেখতে শুরু করল মা বাবা তাকে একসাথে ভালোবাসছে! সত্যিকার ভালোবাসা...!

    পোস্টটি ভাল লাগলে শেয়ার করুন
    যখন তুমি আমার জীবনে ছিলে, তোমাকে কখনো গুরুত্ব দেই নি।
    ভাবতাম তুমি অকারনে বড় বিরক্ত করো।
    কথায় কথায় ফোন করা,
    এখন আর কেও ছোট ছোট কথায় বিরক্ত করে না......
    কিন্তু কেন যেন আজকাল খুব বিরক্ত হতে ইচ্ছা হয়।
    তোমার ছোট ছোট আবদার গুলো পালন করতে ইচ্ছা হয়।
    তোমায় তোমার মত করে ভালবাসতে ইচ্ছে হয়।
    জানি আজ তুমি আমার নও। কারো সংসার নিজের মত করে গুছিয়ে নিয়েছ।
    ময়্নাপাখি আমি এও জানি তুমি আমায় এখনও ভালোবাসো।
    কিন্তু এখন আর ফিরে আসবে না। কারন তুমি ওয়াদা করলে তা পালন ও করো
    তাইতো আমায় করা ওয়াদা পালন করতে তুমি আজ অন্য কারো ঘরের গৃহিণী।
    হয়ত এখন তুমি ভালোই আছো। অথবা কারো বুকে মাথা গুঁজে চোখের জল ঢাকো।
    তখন বুঝিনি আমি তোমার মর্ম, আর এখন শুধু চোখের জলে লিখে যাই ফিরে এসো........................
    জানি তুমি আসবে না, তবু এ মন তোমার অপেক্ষায় আছে,
    যদি পার এ অভাগাকে মাফ করে দিও.....................

    এভাবেই আমাদের ছোট ছোট ভুলে হারিয়ে ফেলি আমাদের প্রিয়জনকে। জীবনের দিকে আরেকবার ফিরে তাকান, আরেকবার ভেবে দেখুন, যাকে হারাচ্ছেন সে আপনার অনেক আপন কেও তো নয়? আসেন আর একবার আমরা ভালবাসার হাত বাড়াই। ভুলে যাবেন না আজ যাকে কষ্ট দিচ্ছেন কাল তার জন্যই এ মন ব্যাকুল হবে....

    পোস্টটি ভাল লাগলে শেয়ার করুন

    স্বামীর গল্প

    স্ত্রীর জন্য পাগলপারা এক স্বামীর গল্প বলছি

    এক লোক, সে ছিল তার স্ত্রীর জন্য পাগল, যদিও তাদের দাম্পত্য জীবনের এই ১০ বছর খুব মসৃন ও সবসময় সুখকর ছিল না। যখন তাকে জিজ্ঞেস করা হলো কেন সে তার স্ত্রীর মধ্যে এমন কি পেয়েছে যার জন্য সে তার
    প্রশংসামুখর, সে বললঃ
    " যখন থেকে আমাদের সংসারের শুরু, আমার অবস্থা যতই খারাপ হচ্ছিল, আমার স্ত্রী আরো বেশী বেশী করে অনুরোধ করছিল আমাকে নামাজ আদায় করার জন্য, কখ

    নই সে এই নসিহত করা বাদ দেয় নাই।

    বছরের পর বছর পার হয়ে গেলেও আমি তার এই কথার কোন মূল্য আর পাত্তা দেই নাই। কিন্তু, যেদিন আমাদের ১০ম বিবাহ বার্ষিকীর দিন ঘনিয়ে এল আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম, সে এবার উপহার হিসেবে কী পাওয়ার ইচ্ছা করছে আমার কাছে। সে খুব সোজা ও সুন্দরভাবে উত্তর দিয়ে বলল, "তুমি যদি আজ থেকে নামাজ পড়া শুরু কর তবে সেটাই হবে আমার জীবনের সবথেকে দামী উপহার পাওয়া"

    আমি তাকে সেদিন আর না করতে পারি নাই, তার কথা ফেলে দিতে পারি নাই। তখন থেকেই আমি আমার নামাজের ব্যাপারে সচেতন এবং নিয়মিত, আলহামদুলিল্লাহ!
    আমার জীবনের এত্ত সুন্দর একটা পরিবর্তনের কারন সেইই এবং আমি তাকে ভালবাসি। আজো আমি দুঃখ করি যে আমার জীবনের কত মূল্যবান সময় অপচয় করেছি এই নামাজ না পড়ে"

    এই ভাইয়ের জীবন থেকে আমাদের বোনেরা একটা শিক্ষা নিতে পারেন।

    সেই সকল বোনদের বলছি, আপনারাই পারেন আপনার স্বামীর জীবনকে, আপনাদের জীবনকে জান্নাতমুখী করতে। নামাজ, রোজাসহ ইসলামের যাবতীয় রীতি-নীতি মানতে আপনারাই আপনাদের স্বামীদের উৎসাহিত করতে পারেন।

    এভাবেই আপনারা দুনিয়ার বস্তুবাদী উপহার না নিয়ে পেতে পারেন আখিরাতের জান্নাতের স্বাদ, জান্নাতি উপহার। তাই আসুন দাম্পত্য জীবনকে করে তুলুন আখিরাত ও জান্নাত মুখী।

    মনে রাখবেন, পৃথিবীর উপহার ক্ষণস্থায়ী, কিন্তু পরকালের উপহার আল্লাহর পক্ষ থেকে এবং তা চিরস্থায়ী। আল্লাহ সকলকে জান্নাতি ও পরহেযগার দাম্পত্যসংগী ও জীবন দান করুন, আমীন

    যদি আপনার ভালো লাগে থাকে তাহলে দয়া করে শেয়ার করে নিবেন । 

    "সত্যিই কি ভালবাসতে"

    আমি যখন ক্লাস নাইনে সায়ন্সে ভর্তি হলাম তখন আমাকে পড়ানোর জন্য ১জন গৃহশিক্ষক রাখা হল।ওনি ছিলেন আমার ভাইয়ার বন্ধু রুয়েটের ২য় বর্ষের ছাত্র।সবাই বলত আমি নাকি দেখতে অনেক মিষ্টি।স্যার আমাকে পড়ানোর ফাঁকে ফাঁকে গল্প করতেন আমার কোন লেখক,শিল্পি,রং পছন্দ ইত্যাদি।স্যারের ব্যক্তিত্ব আমার খুব ভালো লাগত।এস এস সি পরীক্ষার পর ১দিন স্যার কে না বলে আমি আর ভাইয়া স্যারের বাসায় গেলাম।যা দেখলাম তাতে ভীষণ অবাক হয়েছিলাম।দেখলাম স্যারের বাসায় ছট্রো একটা লাইব্রেরি আর সেখানে সবগুলো বই আমার পছন্দের।স্যারকে ১দিন বলেছিলাম আমার খুব ইচ্ছে ঘরের মধ্য একটা লাইব্রেরি বানানো।তার রুমে পুরা একটা সেলফৃ ভর্তি আমার প্রিয় গায়কের অডিও সিডি।তার রুমের ৪টা দেয়াল জুড়ে সুন্দর সুন্দর ওয়াল পেপার।মনে পড়ল আমি স্যারকে বলেছিলাম যদি আমাদের ভাড়া বাসা না হত তাহলে আমি আমার রুম ভর্তি ওয়াল পেপার রাখতাম।তার বিছানার চাদর থেকে শুরু করে সবকিছু আমার পছন্দের কালারের।সবশেষে তার ডায়েরীর ১পেজে দেখলাম পিয়া আমি তোমাকে খুব ভালবাসি কিন্তু প্রকাশ করার সাহস পাই না কারন জানলে যদি তোমাদের বাসায় যাওয়া বন্ধ হয়ে যায় তাহলে তোমাকে দেখার সুযোগ টাও হারাবো।আমি দুষ্টামি করে নিচের লাইনে লিখে আসছিলাম প্রকাশ করার সাহস না থাকলে ভালবাসার দরকার নাই।H.S.Cতে তাকে আবারো গৃহশিক্ষকের পদবীতে রাখা হল।এবার অবশ্য পড়ার চাইতে প্রেমের গল্প বেশি হত কারন ততদিনে আমাদের প্রেমের রচনা লেখা শেষ হয়ে গিয়েছিল।বাসায় জানতে পারার পর সবাই মেনে নিয়েছিল।আমি আমার ভালবাসার মানুষের হাত ধরে গ্রামে দাদু বাড়ি সহ সারা দেশ ঘুরে বেড়িয়েছি।সুখের দিন ক্ষণস্থায়ী তাই হয়ত একসময় সে স্কলারশিপে পাড়ি জমাল অষ্ট্রেলিয়াতে।বাইরে যাবার পর প্রায় ৫মাস তার সাথে কোন যোগাযোগ হয়নি।কিছুদিন আগে হঠাত্‍ তার একটা ইমেইল পেলাম আমাকে ক্ষমা করে দিও পিয়া আমি এখানে আসার একমাস আগে তোমার জায়গায় ধর্মীয় ও সামাজিকভাবে অন্য কাওকে বসিয়েছি।তোমাকে এতদিন বলার সাহস পাই নি।তুমি তোমার পছন্দ মত কাওকে বিয়ে করিও।প্রিয় সাদিক তোমাকে আমার বলার তেমন কিছু নেই শুধু একবার জানতে চাই আমার দোষটা কোথায় ছিল।তোমার মনে আছে দাদুর কথা?ওনি কালকেও আমাকে ফোনে বলতেছিল আর একবার নিয়ে আয় না দাদু আমার শত্রুটাকে শেষবারের মত ২জনকে একসাথে দেখি।তুমি বলতে পার সাদিক আমি এই মূমুর্ষ ব্যক্তিকে কি জবাব দেব??কত সুন্দর অভিনয় করে সবার মন জয় করে রেখে গেছ.......

    মঙ্গলবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০১২

    <কিছু মুহূর্তঃ





    জীবনের ১০টি সবচেয়ে সুন্দর
    এবং ভালো লাগার কিছু মুহূর্তঃ
    ১. প্রেমে পড়া।।
    ২. শেষ পরীক্ষা দিয়ে বের হওয়া।।
    ৩. ঘুম থেকে উঠার পর বেঁচে থাকার আনন্দ।।
    আবিষ্কার করা যে, আপনি আবারো ঘুমুতে সক্ষম।।
    ৪. বন্ধুদের ফোন পাওয়া,
    যাতে জানানো হয়,
    আজকের ক্লাস বাতিল করা হয়েছে।। আন অফিসিয়াল ছুটি!!
    ৫. পুরনো বন্ধুর সাথে দেখা হওয়া এবং উপলদ্ধিকরা যে কিছুই

    বদলায়নি এখনো।। বন্ধুটা একদম আগের মতই আছে।।
    ৬. সদ্য জন্ম নেয়া একটি শিশু বাচ্চার নরম তুলতুলে হাত স্পর্শ করা।।
    ৭. যখন একা থাকেন তখন সবচেয়ে প্রিয় মানুষটার
    ফোন কল অথবা মেসেজের জন্য
    অপেক্ষা করা।।
    ৮. হাইওয়েতে বৃষ্টির মধ্যে প্রিয়
    মানুষটাকে নিয়ে গাড়িতে ঘোরা।।
    ৯. প্রিয় মানুষটার সাথে আয়নার
    সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলা।। অসাধারণ অনুভূতি।।
    ১০. আর সর্বশেষটি হলো,
    উপরের লেখাগুলো পডার সময় আপনার ঠোঁটের কোণায়
    ঝুলে থাকা হাসিমুখটা।।
    আর আপনি যদি হেসেই থাকেন
    তাহলে এখনই লাইক করুন...... :) ♥ :)

    । আমি তোমাকে ভালো..... ।।

    সময় রাত ১১ টা। পড়ার টেবিলে বসে প্রপজ করার হাজারটা উপায় নিয়ে ভাবছি। দেড় বছর ধরে একজনকে প্রপজ করার জন্য ঘুরঘুর করছি কিন্তু বিধাতা প্রতিবারই আমায় দেখে মুচকি হাসেন।

    মিতাকে ১২ দিন আগে বলে রাখলাম যে ক্লাসের পর একসাথে কেএফসি তে লাঞ্চ করব। মনের কথা তখনই বলব। লাঞ্চ করা শেষ। মনে মনে ঠিক করছি কিভাবে বলব। তখনই বাড়ি থেকে বাবা ফোন দিলেন। জানালেন মা-র খুব জ্বর। তাড়াতাড়ি বাড়ি যেত
    ে। মুহূর্তের মধ্যে সব ভুলে গেলাম। মিতাকে রিকশায় তুলে দিয়ে সরাসরি চলে গেলাম বাস স্ট্যান্ডে, রওনা দিলাম বাড়ির দিকে...


    বাড়ি থেকে ফিরতে ফিরতে ৪-৫ দিন লেগে গেল। ঢাকায় এসে সব অগোছালো দেখলাম। কয়েকদিন ক্লাস মিস দেয়ায় অ্যাপ্লিকেশান সাইন করানোর জন্য টিচারদের পেছনে কয়েকদিন ঘুরলাম। এক সপ্তাহ পর সব আবার আগের মত হয়ে গেল। ঠিক করলাম এবার মিতাকে মনের কথা বলে দিব। ক্লাস শেষে মিতাকে বললাম রিকশা করে ঘুরতে যাব...! মিতা তো এক পায়ে খাড়া। রিকশায় বসে বসে চিন্তা করছি কিভাবে মিতাকে কথাটা বলব... মনে মনে ঠিক করে ফেললাম কি বলব। যখনই বলতে নিলাম তখনই রিকশা হঠাৎ করে ব্রেক চাপল। জীবনের প্রথমবারের মত রিকশা থেকে পড়ে গেলাম।

    মিতা তো আমাকে দেখে হাসতে হাসতে শেষ। রিকশাওয়ালার উপর ভীষণ মেজাজ খারাপ হল কিন্তু তারই বা কি করার!! রিকশায় উঠে চুপ-চাপ বসে রইলাম... মিতা হাসছে তো হাসছেই। এমন অবস্থায় মুখে ‘ভালবাসি’ কথাটা আসল না।
    একের পর এক আমার সব প্ল্যান এভাবে পানিতে পড়ছে...! এক সময় আমার কাছে যেন ওকে মনের কথাটা বলাই মুখ্য হয়ে গেল...! হ্যাঁ , না... যা—ই বলুক, আমাকে তো প্রপজ করতে হবে!! মাথায় সারাদিন একটা চিন্তাই ঘুরত কিভাবে মনের কথাগুলো বলব।

    ৩য় বার প্রপজ করেছিলাম স্বপ্নের মাঝে। আল্লাহর অশেষ রহমত ওটা স্বপ্নই। “আমি তোমাকে ভালো...” এ টুকু বলার পরেই গালে ঠাশ করে শব্দ হল। ঘুম থেকে উঠলাম... উঠে দেখি মিতাই ফোন করেছে...

    মিতাকে পছন্দ করি দেড় বছর ধরে। আমার ফ্রেন্ডরা ওদের গার্লফ্রেন্ডদের প্রপজ করেছে পরিচয়ের এক মাসের মাথায়!! আর আমি গাধার মত বসেই আছি। দুজন ফ্রেন্ড আবার এর মধ্যে ব্রেকাপও করে ফেলেছে। দুনিয়া সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। আমি যাচ্ছি উলটা দিকে।

    ঠিক করলাম মিতার পিছে ঘুরবই না। ভালবাসলেই যে বলতে হবে এমন কোন কথা আছে? আমি আমার মত ভালবাসতে থাকি। ওকে না পেলেই বা কি...ভালো তো বেসেছি।
    কিন্ত এ কথাগুলো বলা যত সহজ মেনে নেয়া এত সহজ নয়। তাও আমি প্রপজ করার চিন্তা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলে দিলাম। কতদিন মনের আনন্দে পড়তে বসি না... মাথায় খালি মিতা আর মিতা। আজ থেকে সব বাদ।
    ঘরের লাইট বন্ধ করে ঘুমাতে গেলাম। কাল থেকে আমি দেড় বছর আগের ‘নাফিস’ হয়ে যাব।

    সকালে এক বন্ধুর ফোনে ঘুম ভাঙল। ফোন ধরার পরই বলল, “দোস্ত তুই কই?? তাড়াতাড়ি আয়... মিতার বাসায় নাকি বিয়ে ঠিক করেছে... সবাই মিলে আজ ঘুরতে যাব। বিয়ের পর তো আর ঘুরতে যাওয়া হবে না!”

    মাথা গরম হয়ে গেল। আজই মিতাকে সব বলে দিব। ওকে মোট ১৩ বার প্রপজ করতে গিয়েছিলাম সেটা বলব। কবে থেকে ভালবাসি তাও বলব। রেডি হয়ে রওনা দিলাম। যাওয়ার আগে ঠিক করে ছিলাম সরাসরি বলব I love you……কিন্তু মুখ দিয়ে বের হয়ে গেল ‘আমি তোমাকে বিয়ে করতে চাই’! সবার সামনেই বলে ফেললাম...! সবাই আমার কথা শুনে হেসে উঠল...আমার মেজাজ আরও গরম হয়ে গেল... তারপর একজন বলল, ‘এই কথাটা বলতে এতদিন লাগল’ ? আমি তো অবাক... ওরা জানে কিভাবে যে মিতা কে পছন্দ করি...!

    ~~~~ আসলে মিতার বিয়ে ঠিক হয়নি... আমাকে দিয়ে প্রপজ করানোর জন্যই ওদের এই নাটক...! কে জানে নাটকটা না করলে হয়ত কোনদিনই বলতে পারতাম না...! ~~~~

    সোমবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০১২

    অনলাইনে আয়ের কিছু চরম বিতর্কিত পদ্ধতি যে পথে কখনো ভুলেও পা বাড়াবেন না

    গত কিছুদিন ধরে দেখছি বিভিন্ন ব্লগে অনলাইনে আয়ের নামে চরম ভুল কিছু পদ্ধতি নিয়ে আবোল-তাবোল লিখছেন অনেক নবাগত পথভ্রান্ত ব্লগার কিংবা আজকাল বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানেও দেখছি এই স্ক্যাম পদ্ধতি শিক্ষা দেয়। এই কাজগুলো আসলে যারা করছে তারা নিজেরাই কিছুদিন যাবার পর বুঝতে পারে যে তারা ভুল পথে আগাচ্ছে। কিন্তু ভুল তো ভুল এখন দেখছি অনেকে প্রায় বাজে কিছু কাজেও জড়িয়ে পড়ছে না বুঝে তাই ভাবলাম তারই দু-একটি নিয়ে আজ একটু লিখি। যাতে আর কেউ অন্তত এই ভুলগুলো না করে।

    বেটিং

    বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় প্রতিদিন অনুষ্ঠিত হচ্ছে বিভিন্ন খেলা। আর এসব খেলা নিয়ে অনলাইনে অনেক সাইটেই হয় বেটিং প্রতিযোগীতা। যেখানে থাকে অনেক লোভনীয় অফার। এমনই একটি সাইট bet365.com। এই সাইটটি রয়েছে এমন বাজি প্রতিযোগীতার জন্য শীর্ষে। এখানকার লোভনীয় সব অফার দেখে কিংবা প্রথম ছোট দু একটি দান জিতে অনেকে বড়সর ভাবে নামার প্রস্তুতি নেন কিন্তু এটা নিশ্চিত ভাবে জেনে রাখবেন আপনি যখন জেতেন তখন অন্য কেউ হারে তাই আজ বা কাল আপনাকেও হারতে হবে।

    ক্যাসিনো

    ক্যাসিনো খেলাটির সাথে অনেকই পরিচিত। তবে অনলাইনে এই খেলার পেছনে অর্থ লগ্নি করে বিভিন্ন প্রতিযোগীতা হয়। এটাও বেটিং এর একটি অংশ এবং এখানেও একই কথা প্রযোজ্য।

    হাইপ

    হাইপ শব্দটির সাথে আপনারা অনেকেই পরিচিত হয়ে থাকবেন। কারন এটা নিয়ে বিভিন্ন ব্লগে মাঝে মাঝেই বেশ প্রচারনা দেখা যায়। আবার অনেক সাইটও দেখি হাইপের। ব্লগ পোস্টে বা হাইপ সাইটে গেলে দেখা যায় তারা প্রতিদিন নাকি লগ্নিকৃত অর্থের ২৫% থেকে শুরু করে ৫০০% পর্যন্ত লভ্যাংশ দেয়!! কিন্তু খুব স্বাভাবিক ভাবেই চিন্তা করুন। কোন বৈধ উপায়ে কি এত আয় সম্ভব? কখনোই না কিন্তু তারপরও অনেকে পেমেন্ট প্রুফ পযন্ত দেখাচ্ছে। তবে কোথা হতে আসছে এই অর্থ? হূমম এসব হাইপ সাইটের এডমিনরা তাদের সংগৃহীত অর্থ বেটিং সাইট বা ক্যাসিনোতে লগ্নি করেন। তাই আপনার দেয়া টাকায় যদি তারা বাজি জেতেন তবে আপনিও হয়ত পাবেন লভ্যাংশ দেখাতে পারেন তার পেমেন্ট প্রুফও। কিন্তু যেহেতু আপনার দেয়া টাকা তারা বেটিং বা ক্যাসিনোর মত ঝুকিপূর্ণ জায়গায় বিনিয়োগ করেন। তাই প্রথমদিন হয়ত তারা জিতবে, দ্বীতিয়দিনও জিতল কিন্তু তৃতীয় তো তাকে হারতেই হবে। আর তখন আপনার টাকাও যাবে আর সেই সাইটের কোন হদিসও থাকবে না। কপাল খারাপ হলে এমনটি আপনার প্রথম বিনিয়োগেই হতে পারে। :(   আর এজন্য যে কোন হাইপ সাইটই কদিনের মাথায় স্ক্যাম হয়ে যায়।
    আপনারা হয়ত বিভিন্ন হাইপ রিভিউ সাইটের রিভিউ দেখে কোন সাইটকে ভাল মনে করতে পারেন তবে শুনে রাখুন রিভিউ সাইটের ঐ রিভিউগুলোর বেশীর ভাগই স্পন্সর করা। মজার ব্যাপার হলো এমন একটি স্পন্সর রিভিউ বাংলায় লেখার অফার আমার কাছেও এসেছিল। আমি তাদেরকে ফিরিয়ে দিলেও কৌশলে জেনে নেই তাদের ভেতরের অনেক কথা। :P

    ক্লাব এস্টেরিয়া

    ক্লাব এস্টেরিয়া নামক একটি শব্দ আজকাল খুব শুনছি। যা থেকে নাকি অনলাইনে আয়ের প্রচুর সুযোগ আছে বলে শুনি। তবে আমি আর এই স্ক্যাম পদ্ধতিটি সম্পর্কে বেশি কিছু বলতে চাচ্ছি না আপনারাই একটু যাচাই করে দেখুন তো এটা কি অনেকটা হাইপের মতই না?




    Earning System



    ****Freelance work is becoming a massive outlet of success for many people. The reasons are obvious. One is the notorious and expansive growth of the Internet, making instantaneous networking across the globe all the more viable by the day. Another key aspect is the nearly unlimited mass of “categories” and areas of freelance, and as the web expands, the demand for creative work follows. Gigbucks is a quickly growing micro-job site, gaining some true longevity through excellent marketing and a top-tier service. oDesk is similar, but has been around longer, finding an established audience of credible workers. They are, in essence, freelance job websites where people buy and sell services relating to the web and other accompanying areas. Both are worth exploring for the creative and freelance oriented minds.



    Earn money via online from websites

    Technology is the business extension of science and the greatest technology ever invented is Internet. Some people says the Internet has made more millionaires than any other means in history. Millions of people have found success with internet and millions of people still seeking gold coins on the internet.
    Anyway we are not gonna teach you how to be a millionaire or billionaire.  We are just trying to let you know that how you can make some money extra
    • Earn with your own website - You can earn a decent amount of money if you dedicate some advertising space on your website or blog. You will get paid when someone clicks on a ad placed on your website or blog.
    • Earn for visiting sites - You can Earn a few cents per website you visit, through a specific paid to click network.
    • Earn by Writing article - There is thousands of websites want to pay you for your article or writings.
    • Get paid to signup - You can earn some money by joining a website as a member.
    • Earn from online Games - Play online games and win, you will get a reward by the authority of that site.
    • Earn from your photos - If you have some photos captured by you, then you can sell them online. Some sites pays you if you upload those on that site.
    • Earn from your videos - There is also opportunity of earning by uploading your videos.
    • Work from home jobs - Actually i am talking about freelance and outsourcing jobs with what you can earn your livelihood.
    Most of the cases You need to have a Paypal, E-gold or Moneybookers account to receive payments.
    • Paypal - Paypal is a third party payment processor. It can pay or receive funds one behalf of you, all you need is to open a account with Paypal. But be careful if you are from Bangladesh then Paypal is not for you because Paypal does not support Bangladesh. So don't try to do anything fraud with paypal, you will loose all of your money. Mostly try to avoid Paypal fund receiving option where another payment option is available. If you do not have another option then just contact someone who have a verified paypal account. ask him/her to receive fund on his account for you. Or you can contact some hosting firms to receive fund for you. Learn more on www.paypal.com
    • E-gold - E-gold is like paypal and it supports any country. just signup and start receiving funds. more on www.e-gold.com

    • Moneybookers - It is also like paypal and supports all country.

    ভেরীফাইড পেপ্যাল একাউন্ট

    বাংলাদেশে অনলাইনে যারা কাজ করেন তারা আসলেই জানেন একটি ভেরীফাই পেপ্যাল কতটা জরুরী। আমি আজ সহজে কিভাবে একটি ভেরীফাইড পেপ্যাল আইডি পেতে পারেন সে ধরেনের একটি ট্রিকস সম্পর্কেই  আমার এই পোস্টে বলব। তো আসুন শুরু করা যাক। (বোঝা না গেলে বড় করে দেখতে ছবির উপরে ক্লিক করুন।)
    (1)

    (2)

    (3)

                                                                             (4)
    (5)


    (6)


    (7)

    (8)

    (9)


    (10)


    (11)


    (12)

    (13)

    (14)

    (15)

    (16)

    (17_

    (18)







    বৃহস্পতিবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০১২

    “এক সন্ধ্যায়” Part 03


    তূর্ণ আর রিনঝিন এর এসব সপ্নের ঘোরেই একমাস চলে যায়, রিনঝিন খুবভালো মতো বুঝেছে যে তূর্ণকে ছাড়া সে থাকতে পারবে না। মা না হয়েও ওর শুধু মনে হয় তূর্ণকে যেন ওই জন্ম দিয়েছে। আর তূর্ণও সারারাত ঘুমাতে পারেনা, ওর খুব ইচ্ছ
    ে করে রিনঝিনকে জড়িয়ে ধরে ঘুমাতে। মায়ের কোন স্মৃতিই ওর কাছে না থাকায় চোখ বন্ধ করলেই ও দেখতে পায় রিনঝিন ওকে দুহাত বাড়িয়ে ডাকছে।
    কদিন ধরেই তূর্ণ বাবার কাছে জেদ করছে রিনঝিন মিস কে ওদের বাসায় নিয়ে আসতে। লুব্ধর অনেক বোঝানোরপরেও যখন ও কিছুতেই বুঝতে চায়নি লুব্ধ ওকে অনেক বকেছে। সেই থেকে তূর্ণ আবারও চুপ হয়ে গেছে। এর মাঝে একদিন ও সপ্নে দেখলো রিনঝিন বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে চলে যাচ্ছে, তূর্ণ বারবার মা মা বলে ডাকছে কিন্তু রিনঝিন ফিরে আসছে না, চলেই যাচ্ছে। এই সপ্ন দেখার পরই তূর্ণর ভীষণ জ্বর এলো।
    লুব্ধ ওকে সকালে ডাকতে এসে ভাবলো এখনও ঘুমাচ্ছে ঘুমাক, স্কুল বন্ধ বলে আর না ডেকে অফিস এ চলে গেলো লুব্ধ। রিনঝিন দুপুরের একটু আগেইএ বাসায় চলে এলো রান্না করে তূর্ণকে খাওয়াবে বলে। কিন্তু স্তব্ধ রিনঝিন তূর্ণর জ্বরে পুরেযাওয়া শরীরটা শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বসে রইলো। ও কতক্ষন ওভাবে বসেছিল তাও বলতে পারেনা, শুধু তূর্ণ যখন বলছিলো- মা... আমাকে ছেড়ে যেওনা, আমাকে সাথে নিয়ে যাও, স্কুল এ সবার মা আছে...তখন রিনঝিন আর সহ্য করতে না পেরে পাগলের মতো কাঁদতে লাগলো।
    বিধাতা উপরে বসে এই কাহিনীর কি সমাপ্তি লিখছিলেন জানিনা, কিন্তুআশ্চর্যজনক ভাবে লুব্ধ বাসায় ফিরে এই দৃশ্য দেখে ফেললো।
    লুব্ধকে দেখে রিনঝিন কান্না থামিয়ে ওর দিকে তাকালো। রিনঝিন এর চোখের দিকে তাকিয়ে লুব্ধ ভয় পেয়ে গেলো। ওর চোখের মধ্যে একটা ভয়ংকর আকুতি ছিলো যা ফিরিয়ে দেয়া হয়ত স্বয়ং সৃষ্টিকর্তার কাছেও অসম্ভব, তাই লুব্ধ চোখ সরিয়ে তাড়াতাড়ি ওখান থেকে চলেগেলো।
    সন্ধ্যায় তূর্ণর জ্বর একটু কমে আসায় রিনঝিন লুব্ধর ঘরে গেলো।
    - লুব্ধ আপনার সাথে আমার কিছু কথা ছিল।
    - হ্যাঁ বলুন।
    - আমি এ বাড়ি থেকে যেতে চাইনা।
    - মানে কি?
    - মানে আপনি ভালো করেই বুঝতে পারছেন লুব্ধ।
    - না আমি পারছি না।
    - আমি তূর্ণর মা হয়ে এ বাড়িতে থাকতে চাই।
    - রিনঝিন, আমি তৃণার জায়গা কখনই কাউকে দিতে পারব না। দুদিনের আবেগে ভুল করে বসবেন না।
    - আমি আপনার জীবনে তৃণার জায়গা নিতে চাইছি না, আমি শুধু তূর্ণর মা হতে চাইছি। তবে মিথ্যে বলবো নাআপনাকে, গত একটা মাসে রাতের পর রাত আমি ইচ্ছে করে জেগে থেকেছি আপনাকে নিয়ে ভাবতে ভালো লাগে বলে, দুপুরে অনেক যত্নে রেধেছি তূর্ণর সাথে সাথে আপনারও তৃপ্তি করে খাওয়া মুখটা দেখব বলে। এর নাম যদি ভালবাসা হয় তবে হ্যাঁ আমি আপনাকে ভালবাসি। কিন্তু দেখুন না, পৃথিবীটা কত নিষ্ঠুর, ২৫টা বছর ধরে তিলতিল করে নিজের ভালবাসাগুলোকে জমিয়ে রেখেছিলামকোন এক সপ্নমানবকে উজার করে দেব বলে, অথচ আমার সপ্নমানব এমন এক বাস্তবরূপে আমার সামনে এলো যার খুব কাছে থেকেও হাত বাড়ালেও তাকে ছুয়ে দেয়া যায়না।
    - লুব্ধ কি বলবে ভেবে পায়না। রিনঝিনের জন্য ওর খুব কষ্ট হচ্ছে। কিন্তু কেন হচ্ছে সেটা ও বুঝতে পারছে না, শুধু গলার কাছে কি যেন দলা পেকে উঠে আসতে চাচ্ছে।এরকম ভয়ংকর কষ্ট তো ওর আগে কখনও হয়নি? রিনঝিনের কাজলে লেপটে যাওয়া চোখদুটো কি ওকে তৃণার কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে? কেন ওর মনে হচ্ছে যেন রিনঝিন নয় তৃণা ওকে ডাকছে।
    - লুব্ধ আমি চলে যাচ্ছি। রিনঝিন উলটো ঘুরে ফিরে আসতে লাগলো, ওর ভীষণ কান্না পাচ্ছে, লুব্ধ যদি একবার ওকে ডাকতো......।।
    না রিনঝিন একা কাঁদছে না, ওকে সঙ্গ দিতেই বুঝি বৃষ্টি শুরু হলো। রিনঝিন ঘর থেকে বেড়িয়ে আঙিনায় দাঁড়িয়ে ভিজতে লাগলো... ওর পা যেন গেট এর কাছে যেতে চাইছে না, হাটু ভেঙে বসে পড়লো ও মাটিতে।
    - রিনঝিন ঘর থেকে বেড়িয়ে যাওয়ার সাথেই লুব্ধ বুঝে ফেললো ওর কেন এত কষ্ট হচ্ছে। রিনঝিন এর চোখদুটো একবার ছুয়ে দিতে না পারলে, ওর হাতটা একবার ধরতে না পারলে এই কষ্টটা কমবে না। লুব্ধ ছুটে গেলো রিনঝিনকে আটকাতে, বৃষ্টির মধ্যে বসে কান্নারত রিনঝিনের সামনে গিয়ে বসলো লুব্ধ, কিন্তু একরাশ আড়ষ্টতা ওকে ঘিরে রাখায় ও কিছুই বলতে পারলো না। রিনঝিন লুব্ধকে এভাবে দেখে আচমকা ওকে জড়িয়ে ধরলো। লুব্ধর আড়ষ্টতাগুলোও যেন রিনঝিনের ছোঁয়ায় পালিয়ে গেলো।
    আর তূর্ণ তখন বারান্দায় দাঁড়িয়ে চশমা নাকের ওপরে ঠেলে দিয়ে বিজ্ঞের মতো বলে উঠলো- বাবা, মা তোমরা বৃষ্টিতে ভিজছো কেনো? বাংলা মিস বলেছে রাতের বেলা বৃষ্টিতে ভিজতে হয়না, তাহলে জ্বর আসে।
    তূর্ণর কথা শুনে লুব্ধ রিনঝিন দুজনই হেসে ফেললো......।।

    LIKE+SHARE+TAG+COMMENT
    for next story

    “এক সন্ধ্যায়” Part 02

    তূর্ণ অনেক ভেবে ঠিক করেছে তূর্ণা নামের পাঁজি মেয়েটার সাথে সে কিছুতেই কথা বলবে না, এটাই ওর শাস্তি। কিন্তু স্কুল এ আসার পর থেকেই তূর্ণা আবার ওর পিছু লেগেছে। এত সিট থাকতে ওর পাশেরটাতেই বসতে হবে?
    - অ্যাই তূর্ণ... দ্
    যাখ আমি তোর জন্য কি নিয়ে এসেছি, তোর প্রিয় আলুর পরোটা।
    - তূর্ণ ঠোঁট কামড়ে অন্যদিকে তাকিয়ে রইলো। মেয়েটা তো আচ্ছা দুষ্টু।
    ক্লাস এ মিস চলে আসায় তূর্ণ যেন হাফ ছেড়ে বাচলো। কিন্তু ও কি জানত ক্লাস শেষে কি অপেক্ষা করছে ওর জন্য?
    তূর্ণা একটা লাল গোলাপ ওর দিকে বাড়িয়ে বললো – তূর্ণ আমি তোকে ভালবাসি, হি হি হি...... ক্লাস এর সবার হাসি দেখে তূর্ণ রাগে ছুটে গেলো বাংলা মিস এর কাছে।
    - বাংলা মিস সব শুনে অনেক কষ্টে হাসি চেপে তূর্ণ কে বললো- এটা তো তূর্ণা একদম ঠিক করেনি, সবার সামনে এভাবে বলা ঠিক না, কোথায় তূর্ণা?
    - তূর্ণা কে মিস ডেকেছে শুনে ওর মনটাই খারাপ হয়ে গেলো, সে ভাবল আজ নির্ঘাত বকুনি খেতে হবে। তূর্ণ টা যে এত বোকা কেন ও ভেবে পায়না। ভয়ে ভয়ে মিসের সামনে গিয়ে দাঁড়ালো। মিস ওকে কাছে ডেকে বললেন-
    - শুনলাম তূর্ণা নাকি তূর্ণ কে ভালবাসে?
    - তূর্ণা সজোরে উপর নিচে মাথা ঝাকালো।
    - হুম... কিন্তু ভালবাসতে হলে তো বড় হতে হবে, অনেক ভালো করে পড়াশোনা করতে হবে। তার আগে কাউকে এসব কথা বলা যাবে না, ঠিক আছে?
    - তূর্ণা আবার মাথা ঝাকায়।
    স্কুল এর পিওন কামরুল দরজায় এসে দাড়ায়- আপা তূর্ণর বাবা আসছে, ওকে ডাকে।
    - ঠিক আছে তুমি ওনাকে এখানে নিয়ে এসো।
    লুব্ধ দুইমাসব্যাপী একটা প্রোজেক্ট এর কাজ হাতে নিয়েছে, তূর্ণকে একদম সময় দিতে পারবেনা, তাই ও চাইছিলো স্কুল এর কোন টিচারযদি ওকে এই দু’মাস পড়াতো তাহলে ওর চিন্তাটা একটু কমতো, এজন্যই স্কুল এ আসা।
    - ও আপনিই তাহলে তূর্ণর বাংলা মিস? আমার ছেলে সবসময় আপনার কথার উদাহরন দেয়।
    - জি- আমি রিনঝিন।
    - আপনি বাংলা মিস না হয়ে নাচের মিস হলে আপনার নামের সাথে বেশ মানাতো।
    - রিনঝিন লুব্ধ দুজনই হাসে।
    অবশেষে ঠিক হলো তূর্ণকে এই দু’মাসওর প্রিয় বাংলা মিস পড়াতে আসবে। তূর্ণ তো মনে মনে ভীষণ খুশি।
    রিনঝিন আর তূর্ণ মাত্র কদিনেই একজন আরেকজনের খুব কাছে চলে এসেছে। তূর্ণ সারাদিন অপেক্ষায় থাকে কখন বাংলা মিস আসবে বাসায়, মাঝে মাঝে রিনঝিন স্কুল শেষে তূর্ণকে বাসায় দিয়ে আসে, তূর্ণ একদিন রিনঝিনকে বললো- জানো মিস, বাবাটা না একদম পঁচা রান্না করে। আমার একটুও খেতে ইচ্ছে করেনা। রিনঝিন এইকথা শোনার পর প্রায়ই স্কুল শেষে হোস্টেল এ না ফিরে তূর্ণর সাথে বাসায় চলে আসে, কোমরে শাড়ি পেঁচিয়ে রান্না করে, তূর্ণকে খাইয়ে দেয়। তূর্ণর শুধু মনে হয় ও ওর মাকে পেয়েছে। মা থাকলে নিশ্চয়ই এমনিকরে ওকে আদর করতো। ও প্রায়ই আবদার করে বসে, মিস সন্ধ্যা হলেই চলে যেতে পারবে না, কেন মিস এই বাসায় থাকতে পারেনা।
    - এ কথা শুধু লুব্ধ আর রিনঝিন কে বিব্রতই করে। তবে তূর্ণর এসব কথা শুনতে শুনতে রিনঝিন এর মনের ভেতর নিষিদ্ধ একটা সপ্নের আনাগোনা শুরু হয়েছে, লুব্ধর দিকে তাকালে কেন জানি লজ্জা করে ওর। অজানা এক ভাললাগা সবসময় ওর মনটাকে ওই বাসায় টানে শুধু।
    Next ParT

    “এক সন্ধ্যায়” Part 01



    তূর্ণর আজ খুব মেজাজ খারাপ। সে কারো সাথেই কথা বলছে না। বাবা স্কুল থেকে নিতে এসেছে, বাবার সাথে বাড়ি ফেরার পথেও রিক্সায় ও একটা কথাও বলেনি। বাবা অবশ্য দু’বার জিজ্ঞেস করেছে- কিরে ব্যাটা, মুখের ভেতর কি ভাপা পিঠা ঢু
    কিয়ে রেখেছিস নাকি? কথা বলিস না কেনো? বাবাটা যে কি না? মুখের ভেতরে কি কখনও ভাপা পিঠা রেখে দেয়া যায়? যতই দিন যাচ্ছে বাবাটা ততই বোকা হয়ে যাচ্ছে।

    বাসায় ফিরেই তূর্ণ চুপ করে সোফার উপর পা তুলে বসে পড়লো। লুব্ধ ছেলের গুরুগম্ভীর চেহারা দেখেই বুঝেছিলো কিছুতো একটা ঘটেছে স্কুলে, তাই সেও সোফায় তূর্ণর পাশে ওর মতো করেই পা তুলে বসে পড়লো।
    তূর্ণ ডান হাতের তর্জনী আঙুল গালে দিয়ে গভীর চিন্তায় ব্যস্ত। লুব্ধও ছেলের দেখাদেখি গালে আঙুল দিয়ে ভাবতে লাগলো। তূর্ণ আড়চোখে বাবাকে দেখে গাল থেকে হাত সরালো।

    - বাবা তুমি আমাকে নকল করছো কেনো? বাংলা মিস বলেছে নকল করা খুব অন্যায়।

    - আচ্ছা যা আর নকল করবো না, কিন্তু তোর কি হয়েছে সেটা আগে বলতে হবে তো।

    - আমার খুব রাগ হয়েছে বাবা।

    - কার উপর বলেই দ্যাখ না, বাবা আচ্ছা করে বকুনি দিয়ে দেবে।

    - ক্লাস থ্রীর নিত্য ভাইয়া আমাদের ক্লাস টু এর ব্ল্যাক বোর্ড এ লিখেছে তূর্ণ+ তূর্ণা, বাবা এটা কি কোন অংক হলো বলো? আমি কি কোন সংখ্যা যে যোগ করা যাবে?

    - ও... তাহলে তোর রাগ হয়েছে নিত্যর উপরে?

    - উহু...
    -তাহলে কার উপর রে ব্যাটা?

    - আমি যখন নিত্য ভাইয়াকে বলছিলামযে এভাবে তো যোগ হয় না, তখন তূর্ণাটা না খুব হাসছিলো। আমাকে বললো, তূর্ণ এভাবে যোগ করে লাভ হয়। লাভ মানে ভালবাসা, বলেই হি হি করে হাসতে লাগলো, আর ওর দেখাদেখি সব্বাই হাসতে শুরু করলো।

    - লুব্ধ তার ছয় বছরের ছেলের কথা শুনে হেসে ফেললো।

    - তূর্ণ চোখের চশমা ঠিক করতে করতে বললো, বাবা তুমি এরকম পঁচা করে হাসছো কেনো? এটা কি হাসির কথা?
    - লুব্ধ অনেক কষ্টে হাসি চেপে বললো-হ্যাঁ তাইতো, এটা মোটেও হাসির কথা না, এই দ্যাখ, আমি আর হাসবো না, এই বলেই লুব্ধ আবারও হেসে ফেললো।
    - বাবা তুমি খুব দুষ্টু হয়ে গেছো,বড়দের দুষ্টুমি করতে হয়না।
    তূর্ণ হনহন করে হেঁটে ওর ঘরে চলে গেলো। ওকে এখন অনেক ভাবতে হবে, কিভাবে তূর্ণা নামের ক্লাস এর সবথেকে পাঁজি মেয়েটাকে শায়েস্তা করা যায়।
    লুব্ধ অবাক হয়ে ভাবে, ছেলেটা কারমতো হয়েছে? ওর মাও তো ভীষণ চটপটেছিলো।
    তৃণা দেখেছো, তোমার ছেলে ঠিক তুমিযেমন চেয়েছিলে তেমনি হয়েছে। তুমি বলতে না, “আমার ছেলেকে আমি আইনস্টাইন বানাবো, আমার ছেলে অকারনে কথা বলবে না, শুধুই ভাববে আর ভাববে।” হ্যাঁ, তোমার ছেলে পিচ্চি আইনস্টাইন হয়েছে। কেনো চলে গেলে তৃণা? তোমার পিচ্চি আইনস্টাইন কে দেখেও গেলেনা একবারের জন্য। ওই যে উপরে একজন বসে আছেন, তার সাথে কি তোমার চুক্তি হয়েছিলো, তূর্ণ চোখ খুললেই তোমার চোখের পাতা বন্ধ করতে হবে? তাই যদি হয় তবে উনি আমার সাথে কোন চুক্তি করলেন না কেনো? তুমি সবার সাথে সাথে কি উনারও খুব পছন্দের ছিলে? লুব্ধর চোখ ঝাপসা হয়ে আসে। তৃণা বেঁচে থাকতে ও বারবার তৃণার কাছে অভিযোগ করতো, জীবনটা এত ছোট কেনো? অথচ তখনকার মনে হওয়া সেই ছোট জীবনটা আজ লুব্ধর গলায় আটকে যাওয়া কাঁটার মতো মনে হয়, যেই কাঁটা গলায় নিয়ে প্রতিটা মুহূর্ত গিলতে হয় ওকে। তূর্ণ না থাকলে কবেই চলে যেত ও তৃণার কাছে, ওর তৃণা যে একা থাকতে ভীষণ ভয় পায়। লুব্ধর মাঝে মাঝে মনে প্রশ্ন জাগে, ওর ছেলেটা মায়ের ভালবাসা না পেয়েই এমন সবার থেকে আলাদা হয়ে যায়নি তো?
    - বাবা খাবে না? আমার ক্ষুধা পেয়েছে।
    - লুব্ধ চোখ মুছে হেসে উত্তর দেয়,হ্যাঁ আমারও ভীষণ ক্ষুধা পেয়েছে। চল, তোকে আমি আজ নিজ হাতে খাইয়ে দেবো।
    - বাবা ছোট বাচ্চাদের খাইয়ে দিতেহয়, আমি তো অনেক বড় হয়ে গেছি।
    - হুম...ঠিক আছে তাহলে তুই আমাকে খাইয়ে দিস।
    - তুমি রান্না করবে কখন? এত কথা বলে সময় নষ্ট করো কেনো? আজ তো বুয়া আসেনি।
    - বলিস কি রে? চল, দেখি কি রান্না করা যায়।
    তূর্ণ চুলোর পাশে টেবিলের ফাঁকা জায়গায় বসে আছে আর লুব্ধ ডিম ভাঁজি করার চেষ্টা করছে।

    - এইবার দ্যাখ, বাবা কিরকম ডিম ভাঁজি করে, এরথেকে ভালো ডিম ভাঁজিপৃথিবীর কেউ করতে পারবে না, তোর বাবা তো সবার বড় মাস্টার শেফ্ বুঝলি? ডিম যখন তেলে দেয়া হলো তখন তো লুব্ধ খুব খুশি নিজের কৃতিত্বে কিন্তু ডিম উল্টাতে গিয়ে ওর হাসি মিইয়ে গেলো কারন কড়াই মশাই ডিমটাকে নিজের সম্পত্তি মনে করে জোর করে ধরে রেখেছে।
    - লুব্ধ ছেলের দিকে তাকিয়ে ভ্যাবলা মার্কা হাসি দিয়ে বললো- এটাই তো এই ডিম ভাঁজির বৈশিষ্ট্য,টুকরো টুকরো হয়ে থাকবে, কখনও খেয়েছিস এমনটা?
    - তূর্ণ তার স্বভাব মতো কথা না বলেচশমাটা নাকের কাছ থেকে উপরে তুলে দিলো।
    খেতে বসে লুব্ধ ছেলেকে জিজ্ঞেস করলো কেমন হয়েছে ব্যাটা? তূর্ণ চুপচাপ খেতে থাকলো।
    - কিরে বলনা কেমন হয়েছে খেতে?
    - বাবা এত খারাপ ডিম ভাঁজি আমি কখনও খাইনি।
    - লুব্ধ আবারও ওর বিখ্যাত ভ্যাবলামার্কা হাসি দিয়ে বলে, এভাবে বলছিস কেনো? খারাপ হলেও মানুষকে খুশি করার জন্য ভালো বলতে হয়।
    - মিথ্যা বলা মহাপাপ বুঝেছো বাবা?বাংলা মিস বলেছে কষ্ট পেলেও সত্যি কথা বলতে হয়।
    - সবসময় এত বাংলা মিস বাংলা মিস করিস কেন? তোর বাংলা মিস কি সবজান্তি শমসেরনি নাকি?
    - বাবা সবজান্তি শমসেরনি নয়, সবজান্তা শমসের। আর হ্যাঁ বাংলা মিস সব জানে।
    - ঠিক আছে আমার আব্বা মানলাম বাংলা মিস সব জানে।
    - বাবা আমি তোমার আব্বা কিভাবে হবো? তুমি এত বোকা কেন বাবা?
    - ওরে...... আচ্ছা যা, আমি তোর আব্বা। এবার ঠিক আছে?
    - হুম।
    Next Part

    প্রতারক

    আজকেও বাসা থেকে বের হতে দেরী করবে ছেলেটা, তারপর পড়ি মরি করি চোখে মুখে নাস্তা একটু দিয়েই দেবে দৌড়। ত্রিলয়, এই ত্রিলয়... বলতে নাস্তার প্লেট হাতে যেতে থাকেন ত্রিলয়ের রুমে। গিয়ে দেখেনত্রিলয় মনোযোগের সাথে পিসি চালাচ্ছে।

    - এই তোর খাওয়া লাগবে না?
    - রেখে যাও, খেয়ে নেব
    - কয়টা বাজে সে খেয়াল আছে?
    - কয়টা?
    - ১০টা ৩০ বাজে
    - এই সেরেছে......... ­......

    বলেই ছুটল রুমের বাইরে, ব্রাশ করে,গোসল করে নাকে মুখে নাস্তা একটু গুজে বেড়িয়ে গেল ত্রিলয়। ছেলেকে নিয়ে সবসময় ই দুশ্চিন্তায় থাকেন ত্রিলয়ের মা, ছেলেটা যেভাবে রাস্তায় চলা ফেরা করে কবে না যেন কি অঘটন করে বসে, একটা মাত্র ছেলে তার। তাই টেনশন টা আরও বেশি হওয়াইস্বাভাবিক।

    ত্রিলয় একটু পাগল টাইপ হলেও ফাজলামির বেলায় একেবারে সেরা, টেকনোলোজির বিষয়ে সে নেশার থেকে বেশি আসক্ত, বাসায় যতক্ষণ ই থাকবেমিউজিকে ঘর কাপাবে, আর একটার পর গেমস এর লেভেল কমপ্লিট করবে, আজ প্রিন্স অফ পার্সিয়া, তো কাল মাস এফেক্ট না হয় এন.এফ.এস চলছে। ত্রিলয়ের মায়ের ভাষায়, খাওয়া ঘুম ছাড়া তার ছেলের মুখ পিসি ছাড়া কেউদেখতে পায় না।

    রাস্তায় বের হয়েই মনে পড়লো রাস্তা তো কাটা, রাস্তা ঠিক করা হচ্ছে, রিকশা নিলেও ঘুর পথে যাবে তাতে আরও দেরী হবে বরং হেটে যাওয়াই ভালো। বাস স্টপে আসতেই দেখে বাস দাড়িয়ে আছে, দেখেই রাস্তা এদিক, ওদিক এক ঝলক দেখেই দৌড়ে পার হয়ে গেল। টিকেট কেটে বাসউঠবে, ভাড়া ঠিক ই ডাবল দিচ্ছে কিন্তু গেটে বাঁদর ঝোলা হয়ে যেতে পারবে কিনা তাও সন্দেহ !! তার উপর ক্লাসে আজ প্রোজেক্টর বিষয়ে কাজ আছে, আগেই যেতে পারলেই ভালো, তারউপর ঢাকা সিটির যা জ্যাম, লাগতে পারলে হয় একবার ছাড়ার নাম আর করে না।

    বাসে উঠে দাঁড়িয়েছে, তার পাশে এক লোক, আর তার পাশে দুইটা মেয়ে। লোকটার পায়ে মেয়ে দুইটার একজন পাড়া দিল, লোকটা ককিয়ে উঠে, আপনি আমার পায়ে পাড়া দিলেন কেন? আর বলবেই না কেন একেবারে পেনসিল হিলের পাড়া :p মেয়েটা অতি শুদ্ধ ভাষায় বলে ওঠে

    - “আশ্চর্য, আপনার পায়ে আমি পাড়া দেব কেন? আপনি কি আমার পরিচিত নাকি”

    - ওমা, তাহলে কি পরিচিত দের পায়ে পাড়া দিয়ে বেড়ান?

    - আপনি আমার সাথে পায়ে পাড়া দিয়ে ঝগড়া করছেন কেন?

    - পায়ে পাড়া দিলেন আমার, আবার বলছেন আমি আপনার পায়ে পাড়া দিয়ে ঝগড়া করছি, বাহ ভালোই তো...
    ত্রিলয় মিটি মিটি হাসছে, জনসংখ্যা বেশি হয়ে এই দেশে খারাপ হয় নি, এভাবে পাবিকের গুতা ঠাসা খেয়ে বাসে ঝুলে যাবার সাথে সাথে নির্মল বিনোদন ও পাওয়া যায়। মহিলা সিট খালি হতেই মেয়ে দুইটি সেখানে গিয়ে বসে, পাশের লোক চেপে দাঁড়ালে এবার সেও একটু বামে চেপে ভালো করেই দাড়ায়। কানে ইয়ার ফোনে এতক্ষণ পিটবুলের টোমা গানটা বাজছিল, গানের প্লে লিস্ট শেষ হওয়াতে পকেট থেকে মোবাইল বের করতে গিয়ে দেখে তার সামনে এক মেয়েবসে আছে... মেয়েটাকে দেখে তার ভালো লাগে... এবার সুন্দর মত মেয়েটার সিটের সাথে দাড়ায়, বাসের বাম পাশের সারির প্রথম সিটেই মেয়েটা বসে আছে, এতক্ষণ কেন সে দেখলো না সেই লজিক খোজা শুরু করেন, প্রোগ্রামার দের এই এক দোষ, কোড করার মত সবকিছুতেই লজিক খোজে। যাই হোক সে প্লে লিস্ট পাল্টে মেয়েটিকে দেখতে শুরু করে, দু’এক বার চোখা চুখি হয়ে গেল। মেয়েটা কাকে যেন মেসেজ করলো, মোবাইলের স্ক্রিন এক রকম ঢেকে মেসেজ করলো।
    আবার ত্রিলয়ের লজিক খোজা শুরু, ত্রিলয়কে নিয়ে ওর ফ্রেন্ডরা প্রায়ই পচায়,বলে তোর যা স্বভাব তাতে তোর ল পড়া উচিৎ ছিল, কারন দর্শানো নোটিস দিতে পারতি, কি মনেকরে ত্রিলয় নিল কে মেসেজ দেয়, দোস্ত আমার তো এক মাইয়ারে পছন্দ হইছে, এঙ্গেজড কিনা বুজতাছি না, যামু? নিল হল ত্রিলয়ের সকল বদমাইশি আর অপকর্মের সাক্ষী। ওপাশ থেকে গ্রিন সিগন্যাল দিয়ে রিপ্লাই আসে যা, আমি এদিক সামলে নিতেছি।

    ব্যাস নেমে যায় মেয়ের পিছু মতিঝিল, মেয়েটা বোধ হয় এদিকের কোনকলেজে পড়ে, মেয়ের পিছু নেবে এমন সময় দেখে সেই মেয়ে দুইটাও এসে যোগদিয়েছে, বুঝতে আর বাকি নাই ঘটনা কি, তারা তিন বান্ধবী একসাথেই এসেছে। তা যাই হোক সে পিছু নেবেই, কিছুদূর যাবার পর ফোনে মেসেজ দেয় নিল, যেখানে খুশি যা ১২টার মধ্যে আসতেই হবে। এদিকে বাজে ১১.২০, তারানটরডেমের সামনে। এইদিকে ত্রিলয় যদি চলে যায়, মেয়েটার বিষয়
    এখানেইসমাপ্তি, না গেলে ওদিকে প্রজেক্টা গোল্লায় যাবে, নিজেকে ঝাড়ি দিতে থাকে আজ সকালে নেটে না বসলেই হত। পরক্ষনেই ভিন্ন চিন্তাধুর নেটে না বসলে দেরী করে বের হতাম আর একেও দেখতে পারতাম। যাক দেরী করে ভালোই হল।

    কি মনে করে মেয়েটাকে পিছন থেকে শুনছেন বলে চেচাতে সামনে চলে যায়।

    - আমাদের বলছেন?
    - হ্যাঁ
    - বলুন
    - আপনাকে না ওনাকে বলবো
    - জি, আমাকে কি বলবেন বলেন, আমার দেরী হয়ে যাচ্ছে
    - আমারও দেরী হয়ে যাচ্ছে, এত আস্তেহাটেন কেন?
    - বুঝলাম না, আপনি কি এটা বলতেই এসেছেন?
    - এত শুদ্ধ ভাষা আমার ভালো লাগে না, আপনার ফোন নাম্বার দেন

    বিস্ফোরিত চোখে সে বলতে শুরু করে...
    - আমাকে দেখে কি পাবনা ফেরত মনে হয়?
    - আমি কিভাবে বলবো ওখানে গিয়েছেন কিনা
    - আপনি কোন সাহসে আমার নাম্বার চাইলেন?
    - কেন আপনি কি বিশেষ কেউ নাকি, নাম্বার চাওয়া যাবে না?
    - দেখুন, আপনাকে আমি চিনি না, আমার কথা বলবার ইচ্ছা নেই
    - আপনাকেও আমি চিনি না, আপনার সাথেকথা বলবো তাই নাম্বার চাইছি

    এমন সময় ফোনে আবার মেসেজ, তারতারিকর। ত্রিলয় ব্যাগ থেকে খাতা বের করে খচ খচ শব্দ করে নিজের নাম্বারলিখে মেয়েটিকে দেয়, বলতে শুরু করে,আমার দেরী হয়ে যাচ্ছে, নামটাও জিজ্ঞেস করতে পারলাম না, এই নাম্বার কল দিয়েন, কথা আছে বলেই উলটো দিকে দৌড়।
    ত্রিলয় যেতেই নিরার বান্ধবী জুথিআর সামিয়া হাসতে শুরু করে, এইটার সার্কিটে ডিস্টার্ব আছে, জুথির সাথে সামিয়া গলা মিলায়, তালুকদার স্যারের ভবিষ্যৎ বউ রাস্তায় পাগলের পাল্লায়। নিরাদের কলজের বয়সে সবচেয়ে প্রবীণ হলেন এই স্যার, আর ক্লাস পারফরম্যান্স ভালো থাকায় নিরাকে বেশ ভালোই জানেন। হাসি কথার ফাকে মনের ভুলে কাগজটা ফেলে না দিয়ে ব্যাগে রেখে দেয় নিরা।
    part 2 coming

    "ছেঁড়া গল্প" part 2


    part2

    তার চোখের পানি।
    জাহেদের অস্থিরতা বেড়েই চলেছে, সে চেয়েছিল মুমুকে চমকে দিতে, সেজন্যই না বলেই এবার রাজশাহী যাওয়া। বেলা বারোটা, কিন্তু এখনও মুমুর ফোন বন্ধ, একবার মনে হলো কোনোভাবে কি টের পেয়েছে ও জাহেদের আসাটা? হয়তো উলটো তাকে
     ভয় দেখনোর জন্য এটা করছে, এটা মুমুর জন্য নতুন কিছু না। এর আগেওজাহেদকে এভাবে ভয় দেখিয়েছে সে। কিন্তু এত বেলা করে কোনও দিন তার ফোন বন্ধ থাকে না। আবার কল দিলো সে, অপর পাশ থেকে অপারেটর এর সেই চেনা পরিচিত যান্ত্রিক স্বর ভেসেআসে।

    --------------- --------------
    পাঠকরা হয়তো মনে মনে ভাবছেন এর পরে কি হলো? মুমু কেন ফোন ধরলো না?কি হলো ওদের শেষ পর্যন্ত? মুমু কিদেখা করেছে জাহেদের সাথে?? অসম্পূর্ণ একটি কাহিনী, তাই না? আমিতো আগেই বলেছি যে গল্পের নাম “ছেঁড়া গল্প”, তাছাড়া জীবনের সব গল্পই কি ছেঁড়া নয়? আমাদের গল্পগুলো কি কখনও শেষ হয়? জাহেদের ছেঁড়া জীবনের গল্পও শেষ হয়না, শুধু কিছু ঘটনা যা পাঠকদের জানাচ্ছি, পরিশিষ্ট হিসেবে নয়, গল্পের একটি অংশ হিসেবে।

    --------------- ---------------
    মুমু চার বছর আগেই মারা গিয়েছে। যে গভীর মমতায় সে জাহেদের জীবনকে ঘিরে রেখেছিল, জাহেদ সেই মায়া থেকে বের হতে পারেনি, হয়তো কোনদিনপারবেও না। তার জীবন আজও চার বছর আগে স্থির হয়ে আছে, যার কাছে মুমু স্মৃতি না, বাস্তব হয়ে বেঁচে আছে।যে এখনও প্রতি মাসে রাজশাহী যায় মুমুর সাথে পদ্মা পাড়ে একটি গোধূলি পার করতে, আজও ছবি তোলে শুধু মুমুকে একবার বিস্মিত করার জন্য,মুমুর বন্ধ মোবাইল ফোনে কল করে যায় মনে আশা নিয়ে হয়তো কোনোদিন খোলা পাবে। টি বাঁধের সেই বেঞ্চে দুই প্লেট ফুচকা নিয়ে জাহেদকে এখনও বসে থাকতে দেখা যায় মুমুর পোষা কাকগুলোর সাথে সূর্যাস্ত দেখতে। কখনও যদি আপনি যান সেখানে, দেখবেন সূর্যাস্তের ঠিক আগে এলোমেলো কাকের দল বেঞ্চটিকে ঘিরে বসে আছে। তাদের মধ্যে রহস্যময় নীরবতা, যেন তারা অপেক্ষা করছে কারও জন্য।